সিঙ্গাপুর থেকে স্বামীর পাঠানো ৪৫ লক্ষ টাকা আত্মসাত – শিবগঞ্জ সেলিমাবাদের মেয়ে হিরা .

Loading

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে এক প্রবাসীর কাছ থেকে প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এক স্কুল শিক্ষিকার বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত ওই স্কুল শিক্ষিকা হলেন- শিবগঞ্জ পৌর এলাকার সেলিমাবাদ গ্রামের আবদুর রহিমের মেয়ে মোসা. হিরা খাতুন ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা।

এ নিয়ে ভূক্তভোগীর মা মোসা. জায়েদা বেগম বাদি হয়ে বিজ্ঞ আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাদির কৌসুলী অ্যাডভোকেট ড. তসিকুল ইসলাম।

মামলার এজাহার সূত্রে জানাগেছে- শিবগঞ্জ উপজেলার কালুপুর এলাকার আসাদুর রহমানের ছেলে কামরুজ্জামান প্রায় ১৩ বছর ধরে সিঙ্গাপুরের একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। প্রবাসে চাকুরি করার সুবাদে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা মোসা. হিরা খাতুন তার নিজ স্বামী ও এক সন্তানের কথা গোপন রেখে কুমারি পরিচয় দিয়ে প্রবাসী কামরুজ্জামানের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক শুরু করেন। তবে প্রবাসী কামরুজ্জামান ওই স্কুল শিক্ষিকার স্বামী ও সন্তানের বিষয়টি জানতেন না।

এক পর্যায়ে ওই স্কুল শিক্ষিকা হিরা খাতুন প্রবাসী কামরুজ্জামানকে ২০০৬ সালে বিয়ে করেন। বিয়ের কিছুদিন পর হিরা খাতুনকে রেখে কাজের সন্ধানে আবার সিঙ্গাপুরে চলে যান কামরুজ্জামান। এরপর প্রবাসী কামরুজ্জামানের কাছ থেকে দফায় দফায় প্রায় ৪৫ লাখ টাকা ও তিনশত গ্রাম ওজনের স্বর্ণলংকার হাতিয়ে নিয়ে কামরুজ্জামানের পরিবারের কাছে ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে তালাকনামা পাঠিয়ে দেয় ওই স্কুল শিক্ষিকা হিরা খাতুন।

পরে ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে সমাধানের লক্ষে একটি শালিস বৈঠকে ওই স্কুল শিক্ষিকা কামরুজ্জামানের কাছে প্রায় ৪৫ লাখ ও তিনশত গ্রাম ওজনের স্বর্ণলংকার হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন হিরা খাতুন।

পরে স্কুল শিক্ষিকার বাসায় ভূক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা প্রায় ৪৫ লাখ টাকা ও তিনশত গ্রাম ওজনের স্বর্ণলংকার চাইতে গেলে হত্যার হুমকি প্রদান করেন স্কুল শিক্ষিকা হিরা খাতুন।

এ দিকে ভূক্তভোগী কামরুজ্জামানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন- বিয়ের পর থেকেই হিরা খাতুন আমাদের যৌথ পরিবারের সঙ্গে থাকতে চাইতেন না। এরপরও হিরা খাতুনের কথামত পিতার বাড়ি ত্যাগ করে তিনি ভাড়া বাসায় উঠেন। বিয়ের কিছুদিন পর হিরা খাতুনকে রেখে তিনি আবার কাজের সন্ধানে সিঙ্গাপুরে চলে যান।

গত ২০১০ সালে প্রায় ২ লাখ টাকা ব্যয় করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে হিরা খাতুনকে সহকারি শিক্ষক পদে চাকুরির জন্য সহায়তা প্রদান করেন। পরে হিরা খাতুনের ব্যাংক একাউন্টে দফায় দফায় প্রায় ৪৫ লাখ টাকা প্রদান করেন।

তিনি আরও বলেন, আমি এখন বড় নি:স্ব হয়ে পড়েছি। সিঙ্গাপুরের কষ্টার্জিত সবকিছু হাতিয়ে নিয়ে হিরা খাতুন আমাকে পথে বসিয়েছে। তালাকনামা দেয়ার বিষয়ে ভূক্তভোগী কামরুজ্জামান বলেন, ওই একই স্কুলের শিক্ষক আবদুল হান্নানের সঙ্গে হিরা খাতুন পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। পরে ভূক্তভোগী কামরুজ্জামানের মা মোসা. জায়েদা বেগম বাদি হয়ে টাকা আত্মসাত, প্রতারণা ও ভয়ভীতির অভিযোগ এনে হিরা খাতুন ও তার ভাই-বোন এবং বাবাসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আমলী আদালতে মামলা (সিআর ৩০/২০১৯) দায়ের করেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত স্কুল শিক্ষিকা মোসা. হিরা খাতুনের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।