ধামরাইয়ে অবৈধ ইটভাটা গ্রাস করছে ফসলি জমি।

Loading

ধামরাইয়ের অবৈধ ইটভাটা গ্রাস করছে ফসলি জমি। ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলায় গড়ে উঠেছে প্রায় দুইশত ইটভাটা। নিয়ম অনিয়মে গড়ে উঠা এ সকল ইটভাটার অধিকাংশই মানছে না পরিবেশ আইন এছাড়া সিংহভাগ ইটভাটার নেই বৈধ কাগজপত্র। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ইটভাটার দুই কিলোমিটারের মধ্যে কোনো আবাদি জমি ও ঘরবাড়ি থাকতে পারবে না। কিন্ত সেই নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই বে-আইনিভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে একের পর এক ইটভাটা।
ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কয়েক মাস র্পূবে ২০টি ইটভাটা অবৈধ ঘোষণা করে সব র্কাযক্রম বন্ধ রাখার জন্য নোটিশ প্রদান করা সত্বেও বন্ধ হচ্ছেনা অবৈধ ইটভাটার র্কাযক্রম কমছেনা অবৈধভাবে গড়ে উঠা ইটভাটা মালিকদের দৌরাত্ম্য। উপজেলা নির্বাহী র্কমর্কতা আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছে যে সব ভাটার বিরদ্ধে নোটিশ প্রদান করা হেেয়ছ সেসব ভাটা র্কাযক্রম বন্ধ না রাখলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। পর্যায়ক্রমে সকল অবৈধ ইটভাটা বন্ধের নোটিশ প্রদান করা হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের আইন অমান্য করে ও প্রশাসন ম্যানেজ করে জনবসতি ও ফসলি জমি এলাকায় গড়ে উঠা ইটভাটার কারণে ধ্বংস হচ্ছে ফসলি জমি দূষণ হচ্ছে পরিবেশ। উপজেলা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এসকল ইটাভাটায় বছরে প্রায় ৩০ লাখ টন মাটি ব্যাবহৃত হয়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলি জমি থেকে মাটি সংগ্রহ করা হয়। ইট তৈরিতে ব্যাবহৃত হয় টপ সয়েল অথ্যাৎ মাটির উপরিভাগ হতে ৬ থেকে ৮ ইঞ্চি পর্যন্ত মাটির এ অংশটি ফসল উৎপাদনের উপযোগী অথ্যাৎ উর্বর অংশ।
নগদ টাকা পেয়ে জমির মালিকরা ও বিক্রি করে দিচ্ছে মাটি।একারনে মাটির উর্বর অংশ ধবংস হচ্ছে কৃষিজমির উর্বরতা কমে যাচ্ছে। ইট ভাটার আশেপাশের এলাকার গাছের ফলের আকৃতি হচ্ছে উদ্ভট, আকার ছোট হয়ে যাচ্ছে সব্জির স্বাদ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আর এভাবে জমির উর্বরতা কাটতে থাকলে দিনদিন ফসল উৎপাদনের মাত্রা হ্রাস পাবে বলে আশংকা করছেন কৃষিবিদরা।
ইটভাটা থেকে যে দূষিত গ্যাস ও তাপ নির্গিত হয় তা আশেপাশের জীবজন্তুু, গাছ-পালা এবং ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে এবং মানুষের স্বাস্থ্যহানির কারণ ঘটায়। ইট ভাটার জন্য অনেক সময় ফল গাছে কোনো ফলই ধরে না, বা ধরলেও তা অকালে ঝড়ে পড়ে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে এক সময় দেশে কৃষি জমির পরিমান হ্রাস পাবে । খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা ব্যাহত হবে। ইট ভাটায় কয়লার ব্যবহার বাধ্যতামূলক থাকলেও বেশী লাভের আশায় কয়লার পরিবর্তে অবধৈভাবে পুড়ানো হচ্ছে কাঠ। নিধন করা হচ্ছে বৃক্ষ। উজার করা হচ্ছে বনভূমি।এতে বিনিষ্ট হচ্ছে আমাদের জীববৈচিত্র ও চিরচেনা প্রকৃতি ও পরিবেশ।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ তে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে যে ইট ভাটায় ফসলি জমরি উপরের মাটি (টপ সয়েল) ব্যবহার করলে প্রথম বারের জন্য দুই বছররে কারাদন্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। দ্বিতীয় বার ঐএকই অপরাধের জন্য ভাটা র্কতৃপক্ষকে ২ থেকে ১০ বছরে জেল এবং ২ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যাবে। ইট ভাটায় কয়লার পরিবর্তে কাঠ ব্যবহার করলে তিন বছরের কারাদন্ড এবং তিন লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় শাস্তি হতে পারে। এসব আইন সরকারের অফিস আদালতের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও বাস্তবে তার প্রয়োগ দৃশ্যমান হচ্ছে না। ফলে কৃষি, পরিবেশ ও মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন ধামরাইয়ের সচেতন নাগরিক সমাজ ও সাধারণ জনগণ।