মাগুরার শ্রীপুরে পেঁয়াজের বাম্পার ফলন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধীক জমিতে পেঁয়াজের আবাদ

Loading

আশরাফ হোসেন পল্টু,মাগুরা প্রতিনিধি :চলতি মৌসুমে মাগুরা জেলার চার উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধীক জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে শ্রীপুর উপজেলায় সবচেয়ে বেশী পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে । আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় পেঁয়াজের ফলনও বাম্পার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।মাগুরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়,চলতি মৌসুমে জেলার চার উপজেলায় ৬ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু আবাদ হয়েছে ৯ হাজার ৩১৫ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ২ হাজার ৭৯৫ হেক্টর বেশি। এর মধ্যে শ্রীপুর উপজেলায় ৫ হাজার ৮’শত ৯৫ হোক্টর জমিতে পেয়াজ আবাদ হয়েছে। যা জেলার মধ্যে শ্রীপুরে সবচেয়ে বেশি জমিতে পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে ।

এ ছাড়া সদর উপজেলায় মাত্র ১ হাজার ১৫০ হেক্টর, মহম্মদপুরে ১ হাজার ৪০০ হেক্টর এবং শালিখা উপজেলায় ৮’শত ৭০হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে। আবাদকৃত জমি থেকে এবছর ১ লাখ ১৭ হাজার ৯০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন হবে বলে কৃষি বিভাগ ধারনা করছেন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, পরিপক্ক পেঁয়াজ তোলার উপযুক্ত সময় এখনও হয়নি বললেই চলে তারপরও অধীক দাম পাওয়ার আশায় গ্রামের কিছু কিছু কৃষক ক্ষেত থেকে আগাম পেঁয়াজ তুলতে শুরু করেছেন। নতুন ওঠা এসব পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে কৃষকরা এখনও লাভের মুখ দেখছেন । কিন্তু পেঁয়াজ চাষে সার, বীজ,ঔষধ ও শ্রমিকের পিছনে যে পরিমান অর্থ ব্যয় হয় তা পুষিয়ে উঠতে কেজি প্রতি ৩০-৪০ টাকা দরের নিচে বিক্রি হলে আর লাভ হয় না ।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উচ্চ ফলনশীল জাতের লাল তীর কিং, বারি পেয়াজ-১ (তাহেরপুরী), স্থানীয় জাতের রাজশাহী কিং, ফরিদপুরীসহ বিভিন্ন জাতের পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। এসব জাতের পেঁয়াজ আবাদে অধীক ফলন হওয়ায় কৃষকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়।

এছাড়া কৃষকরা এজাতের পেঁয়াজ বাজারে বিক্রি করে ভালো মূল্যও পেয়ে থাকেন এবং এর সংরক্ষণ ক্ষমতাও বেশি। যেকারণে এ জাতের পেঁয়াজ বেশি চাষ হয়।
শ্রীপুর উপজেলার কচুয়া গ্রামের পেঁয়াজ চাষি আসাদুজ্জামান লিখন জানান, তিনি এ মৌসুমে ১৮০ শতাংশ জমিতে লাল তীর ও তাহেরপুরী জাতের পেঁয়াজ আবাদ করেছেন।

আবাদকৃত জমি থেকে তিনি ৪’শত মণ পেঁয়াজ পাবেন বলে আশাবাদি। উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের নজরুল মোল্যা জানান,তিনি এবার ১’শ শতাংশ জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করেছেন । আবাদকৃত জমি থেকে তিনি ১’শত থেকে ১’শত ২৫ মণ পেঁয়াজের উৎপাদন পেতে পারেন । তবে বাজার দর বর্তমানের মতো থাকে তাহলে তিনি লাভের মুখ দেখবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন ।

মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জাহিদুল আমিন জানান, চলতি মৌসুমে পেঁয়াজের ফলন অনেক ভালো। এ বছর জেলায় চাষ হওয়া মোট পেঁয়াজের প্রায় ৮৫ শতাংশ জমিতে উচ্চ ফলনশীল লাল তীর কিং, বারি পেঁয়াজ-১ সহ বিভিন্ন জাতের পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। এ মৌসুমের শুরুতে কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছেন।

আগামীতেও পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়াতে আমরা বিভিন্ন উচ্চ ফলনশীল জাতের পেঁয়াজ বীজ সংরক্ষণের জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি।